হাইকোর্ট কর্তৃক অবৈধ ঘোষণা করা ‘টু ফিঙ্গার টেস্ট’ পরীক্ষা এখনো চলমান। যা নারীর জন্য অবমাননাকর বলে মনে করে বাংলাদেশ মহিলা পরিষদ।
শনিবার (১ ফেব্রুয়ারি) বিকেলে মহিলা পরিষদের উদ্যোগে সংগঠনের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে টু-ফিঙ্গার টেস্ট করার ক্ষেত্রে মহামান্য হাইকোর্টের দেওয়া নিষেধাজ্ঞা বাস্তবায়ন পর্যালোচনা বিষয়ক মতবিনিময় সভা অনুষ্ঠিত হয়। সেখানে এ ব্যাপারে মন্তব্য করেছেন নেতারা।
মহিলা পরিষদের কেন্দ্রীয় কমিটির সভাপতি ডা. ফওজিয়া মোসলেমের সভাপতিত্বে স্বাগত বক্তব্য দেন সাধারণ সম্পাদক মালেকা বানু। ধারণাপত্র উপস্থাপন করেন মহিলা পরিষদের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট মাসুদা রেহানা বেগম।
আলোচক হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ মহিলা পরিষদের সহ সভাপতি ডা. রওশন আরা বেগম, আইসিডিডিআরবির ইমেরিটাস সায়েন্টিস্ট রুচিরা তাবাসসুম ও সিনিয়র রিসার্চ ইনভেস্টিগেটর (জেন্ডার ইকুয়ালিটি স্পেশালিস্ট) নাহিদা আক্তার; পাবলিক হেলথ স্পেশালিস্ট ডা. রাহাত আরা নূর।
ধারণাপত্রে যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট মাসুদা রেহানা বলেন, মহিলা পরিষদের উদ্যোগে দীর্ঘদিন ধরে নারীর প্রতি অবমাননাকর দ্বি-আঙ্গুলি পরীক্ষা বা টু ফিঙ্গার টেস্ট বাতিল করে বিজ্ঞানসম্মত, আধুনিক পরীক্ষা পদ্ধতির দাবি জানানোর পরিপ্রেক্ষিতে হাইকোর্ট বিভাগ ‘দ্বি-আঙ্গুলের পরীক্ষা’ বা ‘টু ফিঙ্গার টেস্ট’ অবৈজ্ঞানিক, অনির্ভরযোগ্য এবং অবৈধ ঘোষণা করলেও বাস্তবতা ভিন্ন।
দেশের বিভিন্ন স্থানে ফরেনসিক মেডিসিন বিভাগের সঙ্গে যোগাযোগ করে জানা গেছে বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকরা, মেডিকো-লিগ্যাল পরীক্ষার সঙ্গে যারা কাজ করেন তাদের অনেকেই হাইকোর্ট বিভাগের ‘টু ফিঙ্গার টেস্ট’ নিষিদ্ধ করে দেওয়া রায়টি সম্পর্কে অবগত নন।
এ বিষয়ে স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের উদ্যোগও সীমিত আকারের। ইতোমধ্যে ‘টু ফিঙ্গার টেস্ট’ নিষিদ্ধ করে হাইকোর্ট বিভাগের দেওয়া রায়ের পরিপ্রেক্ষিতে স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয় পরিপত্র জারি করে সব মেডিকেল কলেজ, হাসপাতালের ফরেনসিক মেডিসিন বিভাগে পাঠানো হলেও পরে এ বিষয়ে তেমন কোনো মনিটরিং করা হয়নি।
এ অবস্থায় ধর্ষণের শিকার নারীর মেডিকো-লিগ্যাল পরীক্ষার ক্ষেত্রে হাইকোর্ট বিভাগের ‘টু ফিঙ্গার টেস্ট’ নিষিদ্ধ করে দেওয়া রায়টি বাস্তবায়নে সচেতনতা তৈরিতে ব্যাপক প্রচার প্রচারণা চালানোর জোর দাবি জানানোর পাশাপাশি মোট ১৪টি সুপারিশ উপস্থাপন করেন তিনি।
সাধারণ সম্পাদক মালেকা বানু বলেন, বাংলাদেশ মহিলা পরিষদ আশির দশক থেকে নারীর প্রতি সহিংসতা প্রতিরোধ করে সমতা প্রতিষ্ঠায় কাজ করছে। সংগঠনের অ্যাডভোকেসি কর্মসূচি ও নারী আন্দোলনের দাবির পরিপ্রেক্ষিতে নারীবান্ধব বিভিন্ন আইন প্রণয়ন হলেও আইন বাস্তবায়নে নানা প্রতিবন্ধকতা লক্ষ্য করা যায়। নারীর প্রতি সহিংসতা প্রতিরোধ করে জেন্ডার জাস্টিস কতটুকু নিশ্চিত হয়েছে তা এখন পর্যালোচনার বিষয়।
তিনি বলেন, ধর্ষণের শিকার নারীর ডাক্তারি (মেডিকো-লিগ্যাল) পরীক্ষার ক্ষেত্রে ‘দ্বি-আঙ্গুলের পরীক্ষা’ বা ‘টু ফিঙ্গার টেস্ট’ হাইকোর্ট কর্তৃক অবৈধ ঘোষণা করা নারী আন্দোলনের একটি অন্যতম অর্জন। এ রায় বাস্তবায়ন করতে হবে এবং ধর্ষণের শিকার নারী ও কন্যা শিশুর ন্যায়বিচার নিশ্চিত করতে হবে। হাইকোর্ট কর্তৃক অবৈধ ঘোষণা করা হলেও এখনো ‘টু ফিঙ্গার টেস্ট’ পরীক্ষা চলমান, যা নারীর জন্য অবমাননাকর বলে মনে করে মহিলা পরিষদ।
আলোচনায় ডা. রওশন আরা বেগম বলেন, ধর্ষণের শিকার নারী টু-ফিঙ্গার টেস্ট বিষয়ে হাইকোর্টের রায়ের পরও অনেক ডাক্তার এখনো সচেতন নয়। এটি বাস্তবায়নে ও সচেতনতা তৈরিতে ডাক্তারদের ঐক্যবদ্ধভাবে জেলা ও উপজেলা পর্যায়ে কাজ করতে হবে।
আইসিডিডিআরবির ইমেরিটাস সায়েন্টিস্ট রুচিরা তাবাসসুম বলেন, টু-ফিঙ্গার টেস্ট নিয়ে ডাক্তারদের মধ্যে নানা বিভ্রান্তি আছে। এই টেস্টের মাধ্যমে ধর্ষণের ঘটনা প্রমাণিত হয় কি না তা পরিষ্কার নয়, এ ধারণাটাই অবৈজ্ঞানিক। ধর্ষণের সংজ্ঞা নিয়ে পর্যালোচনা করতে হবে।
আইসিডিডিআরবির সিনিয়র রিসার্চ ইনভেস্টিগেটর জেন্ডার (জেন্ডার ইকুয়ালিটি স্পেশালিস্ট) নাহিদা আক্তার বলেন, টু-ফিঙ্গার টেস্টের ওপর দেওয়া নিষেধাজ্ঞা বাস্তবায়ন মূল্যায়নের লক্ষ্যে পরিচালিত গবেষণাটি ঢাকা, দিনাজপুর ও রংপুরে জেলায় হেলথ, লিগ্যাল সহায়তা দানকারী এনজিওগুলোর ওপর করা হয়।
গবেষণায় দেখা গেছে ঢাকার বাইরে ডাক্তার, আইনি সেবাদানকারী সংস্থার প্রতিনিধি, পুলিশ টু-ফিঙ্গার টেস্টের নিষিদ্ধ বিষয়ে তেমন সচেতন নয়, পর্যাপ্ত জ্ঞান না থাকার কারণে বাস্তবায়ন প্রক্রিয়াও তেমন কার্যকর নয়। এ বিষয়ে সরকারের উদ্যোগে দেওয়া প্রশিক্ষণ তেমন কার্যকর হয়নি। টু-ফিঙ্গার টেস্টের কারণে সহিংসতার শিকার নারীর বিচার পাওয়ায় যেমন বাধা তৈরি হয় তেমনি তারা শারীরিক ক্ষতিরও সম্মুখীন হন।
পাবলিক হেলথ স্পেশালিস্ট ডা. রাহাত আরা নূর ধর্ষণের ঘটনার কেস স্টাডি তুলে ধরে বলেন, নারী ও কন্যার শারীরিক পরীক্ষা করার সময় গোপনীয়তা রক্ষা করতে হবে, শিকার নারীর নিরাপত্তা, মর্যাদা রক্ষার ওপর গুরুত্ব দিতে হবে। ডাক্তারি পরীক্ষার ক্ষেত্রে হয়রানি বন্ধ করতে হবে। মেডিকো লিগ্যাল যে এস ওপি করা হচ্ছে সেখানে টু-ফিঙ্গার টেস্ট নিষিদ্ধের জোর দাবি থাকতে হবে। মেডিকো কারিকুলামে বিষয়টি যুক্ত করতে হবে।
মুক্ত আলোচনায় অংশগ্রহণ করেন ঢাকা মেডিকেলের অ্যাসিস্ট্যান্ট প্রফেসর (ফরেনসিক মেডিসিন) ডা. দেবিকা রায়, স্যার সলিমুল্লাহ মেডিকেল কলেজের সহকারী অধ্যাপক (ফরেনসিক মেডিসিন) আসমাউল হুসনা, বাংলাদেশ হেলথ ওয়াচের কোঅর্ডিনেটর মাহরুবা খানম, জেড এইচ শিকদার ওমেন্স মেডিকেল কলেজ ও হসপিটালের প্রফেসর এস কে জিন্নাত আরা নাসরিন, ডা. রাহাত আরা নূর, শিশু বিশেষজ্ঞ ডা. নাজমুন নাহার, ডা. সায়রা বানু, মহিলা পরিষদের লিগ্যাল অ্যাডভোকেসি অ্যান্ড লবি শাখার ডিরেক্টর অ্যাডভোকেট দীপ্তি শিকদার ও ডেপুটি ডিরেক্টর (লিগ্যাল অ্যাডভোকেসি অ্যান্ড লবি) অ্যাডভোকেট রামলাল রাহা এবং অ্যাসিস্ট্যান্ট ডিরেক্টর অ্যাডভোকেট ফাতেমা খাতুন।
সভাপতির বক্তব্যে ডা. ফওজিয়া মোসলেম বলেন, নারীর প্রতি সহিংসতা প্রতিরোধে বিচারের ক্ষেত্রে কিছুটা অগ্রগতি হয়েছে তবে সহিংসতা বাড়ছে। এ সহিংসতা প্রতিরোধে এখনকার সময়ে তৈরি হওয়া চাহিদার দিকে খেয়াল করতে হবে। হাইকোর্ট বিভাগের টু-ফিঙ্গার টেস্ট নিষিদ্ধ করে দেওয়া রায় বাস্তবায়নে সরকারি, বেসরকারি সংস্থা এবং স্বাস্থ্যসেবা দানকারী সংস্থা ও আইনি সংস্থাকে যৌথভাবে কাজ করতে হবে। সেবাদানকারী সংস্থাকে আরও সচেতন হতে হবে, একইসঙ্গে মানবিক হওয়ার পাশাপাশি পেশাগত দায়বদ্ধতা নিশ্চিতে সদিচ্ছা থাকতে হবে।
অবৈধ ঘোষণার পরও টু ফিঙ্গার টেস্ট পরীক্ষা নারীর জন্য অবমাননার
হাইকোর্ট কর্তৃক অবৈধ ঘোষণা করা ‘টু ফিঙ্গার টেস্ট’ পরীক্ষা এখনো চলমান। যা নারীর জন্য অবমাননাকর বলে মনে করে বাংলাদেশ মহিলা পরিষদ।
শনিবার (১ ফেব্রুয়ারি) বিকেলে মহিলা পরিষদের উদ্যোগে সংগঠনের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে টু-ফিঙ্গার টেস্ট করার ক্ষেত্রে মহামান্য হাইকোর্টের দেওয়া নিষেধাজ্ঞা বাস্তবায়ন পর্যালোচনা বিষয়ক মতবিনিময় সভা অনুষ্ঠিত হয়। সেখানে এ ব্যাপারে মন্তব্য করেছেন নেতারা।
মহিলা পরিষদের কেন্দ্রীয় কমিটির সভাপতি ডা. ফওজিয়া মোসলেমের সভাপতিত্বে স্বাগত বক্তব্য দেন সাধারণ সম্পাদক মালেকা বানু। ধারণাপত্র উপস্থাপন করেন মহিলা পরিষদের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট মাসুদা রেহানা বেগম।
আলোচক হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ মহিলা পরিষদের সহ সভাপতি ডা. রওশন আরা বেগম, আইসিডিডিআরবির ইমেরিটাস সায়েন্টিস্ট রুচিরা তাবাসসুম ও সিনিয়র রিসার্চ ইনভেস্টিগেটর (জেন্ডার ইকুয়ালিটি স্পেশালিস্ট) নাহিদা আক্তার; পাবলিক হেলথ স্পেশালিস্ট ডা. রাহাত আরা নূর।
ধারণাপত্রে যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট মাসুদা রেহানা বলেন, মহিলা পরিষদের উদ্যোগে দীর্ঘদিন ধরে নারীর প্রতি অবমাননাকর দ্বি-আঙ্গুলি পরীক্ষা বা টু ফিঙ্গার টেস্ট বাতিল করে বিজ্ঞানসম্মত, আধুনিক পরীক্ষা পদ্ধতির দাবি জানানোর পরিপ্রেক্ষিতে হাইকোর্ট বিভাগ ‘দ্বি-আঙ্গুলের পরীক্ষা’ বা ‘টু ফিঙ্গার টেস্ট’ অবৈজ্ঞানিক, অনির্ভরযোগ্য এবং অবৈধ ঘোষণা করলেও বাস্তবতা ভিন্ন।
দেশের বিভিন্ন স্থানে ফরেনসিক মেডিসিন বিভাগের সঙ্গে যোগাযোগ করে জানা গেছে বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকরা, মেডিকো-লিগ্যাল পরীক্ষার সঙ্গে যারা কাজ করেন তাদের অনেকেই হাইকোর্ট বিভাগের ‘টু ফিঙ্গার টেস্ট’ নিষিদ্ধ করে দেওয়া রায়টি সম্পর্কে অবগত নন।
এ বিষয়ে স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের উদ্যোগও সীমিত আকারের। ইতোমধ্যে ‘টু ফিঙ্গার টেস্ট’ নিষিদ্ধ করে হাইকোর্ট বিভাগের দেওয়া রায়ের পরিপ্রেক্ষিতে স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয় পরিপত্র জারি করে সব মেডিকেল কলেজ, হাসপাতালের ফরেনসিক মেডিসিন বিভাগে পাঠানো হলেও পরে এ বিষয়ে তেমন কোনো মনিটরিং করা হয়নি।
এ অবস্থায় ধর্ষণের শিকার নারীর মেডিকো-লিগ্যাল পরীক্ষার ক্ষেত্রে হাইকোর্ট বিভাগের ‘টু ফিঙ্গার টেস্ট’ নিষিদ্ধ করে দেওয়া রায়টি বাস্তবায়নে সচেতনতা তৈরিতে ব্যাপক প্রচার প্রচারণা চালানোর জোর দাবি জানানোর পাশাপাশি মোট ১৪টি সুপারিশ উপস্থাপন করেন তিনি।
সাধারণ সম্পাদক মালেকা বানু বলেন, বাংলাদেশ মহিলা পরিষদ আশির দশক থেকে নারীর প্রতি সহিংসতা প্রতিরোধ করে সমতা প্রতিষ্ঠায় কাজ করছে। সংগঠনের অ্যাডভোকেসি কর্মসূচি ও নারী আন্দোলনের দাবির পরিপ্রেক্ষিতে নারীবান্ধব বিভিন্ন আইন প্রণয়ন হলেও আইন বাস্তবায়নে নানা প্রতিবন্ধকতা লক্ষ্য করা যায়। নারীর প্রতি সহিংসতা প্রতিরোধ করে জেন্ডার জাস্টিস কতটুকু নিশ্চিত হয়েছে তা এখন পর্যালোচনার বিষয়।
তিনি বলেন, ধর্ষণের শিকার নারীর ডাক্তারি (মেডিকো-লিগ্যাল) পরীক্ষার ক্ষেত্রে ‘দ্বি-আঙ্গুলের পরীক্ষা’ বা ‘টু ফিঙ্গার টেস্ট’ হাইকোর্ট কর্তৃক অবৈধ ঘোষণা করা নারী আন্দোলনের একটি অন্যতম অর্জন। এ রায় বাস্তবায়ন করতে হবে এবং ধর্ষণের শিকার নারী ও কন্যা শিশুর ন্যায়বিচার নিশ্চিত করতে হবে। হাইকোর্ট কর্তৃক অবৈধ ঘোষণা করা হলেও এখনো ‘টু ফিঙ্গার টেস্ট’ পরীক্ষা চলমান, যা নারীর জন্য অবমাননাকর বলে মনে করে মহিলা পরিষদ।
আলোচনায় ডা. রওশন আরা বেগম বলেন, ধর্ষণের শিকার নারী টু-ফিঙ্গার টেস্ট বিষয়ে হাইকোর্টের রায়ের পরও অনেক ডাক্তার এখনো সচেতন নয়। এটি বাস্তবায়নে ও সচেতনতা তৈরিতে ডাক্তারদের ঐক্যবদ্ধভাবে জেলা ও উপজেলা পর্যায়ে কাজ করতে হবে।
আইসিডিডিআরবির ইমেরিটাস সায়েন্টিস্ট রুচিরা তাবাসসুম বলেন, টু-ফিঙ্গার টেস্ট নিয়ে ডাক্তারদের মধ্যে নানা বিভ্রান্তি আছে। এই টেস্টের মাধ্যমে ধর্ষণের ঘটনা প্রমাণিত হয় কি না তা পরিষ্কার নয়, এ ধারণাটাই অবৈজ্ঞানিক। ধর্ষণের সংজ্ঞা নিয়ে পর্যালোচনা করতে হবে।
আইসিডিডিআরবির সিনিয়র রিসার্চ ইনভেস্টিগেটর জেন্ডার (জেন্ডার ইকুয়ালিটি স্পেশালিস্ট) নাহিদা আক্তার বলেন, টু-ফিঙ্গার টেস্টের ওপর দেওয়া নিষেধাজ্ঞা বাস্তবায়ন মূল্যায়নের লক্ষ্যে পরিচালিত গবেষণাটি ঢাকা, দিনাজপুর ও রংপুরে জেলায় হেলথ, লিগ্যাল সহায়তা দানকারী এনজিওগুলোর ওপর করা হয়।
গবেষণায় দেখা গেছে ঢাকার বাইরে ডাক্তার, আইনি সেবাদানকারী সংস্থার প্রতিনিধি, পুলিশ টু-ফিঙ্গার টেস্টের নিষিদ্ধ বিষয়ে তেমন সচেতন নয়, পর্যাপ্ত জ্ঞান না থাকার কারণে বাস্তবায়ন প্রক্রিয়াও তেমন কার্যকর নয়। এ বিষয়ে সরকারের উদ্যোগে দেওয়া প্রশিক্ষণ তেমন কার্যকর হয়নি। টু-ফিঙ্গার টেস্টের কারণে সহিংসতার শিকার নারীর বিচার পাওয়ায় যেমন বাধা তৈরি হয় তেমনি তারা শারীরিক ক্ষতিরও সম্মুখীন হন।
পাবলিক হেলথ স্পেশালিস্ট ডা. রাহাত আরা নূর ধর্ষণের ঘটনার কেস স্টাডি তুলে ধরে বলেন, নারী ও কন্যার শারীরিক পরীক্ষা করার সময় গোপনীয়তা রক্ষা করতে হবে, শিকার নারীর নিরাপত্তা, মর্যাদা রক্ষার ওপর গুরুত্ব দিতে হবে। ডাক্তারি পরীক্ষার ক্ষেত্রে হয়রানি বন্ধ করতে হবে। মেডিকো লিগ্যাল যে এস ওপি করা হচ্ছে সেখানে টু-ফিঙ্গার টেস্ট নিষিদ্ধের জোর দাবি থাকতে হবে। মেডিকো কারিকুলামে বিষয়টি যুক্ত করতে হবে।
মুক্ত আলোচনায় অংশগ্রহণ করেন ঢাকা মেডিকেলের অ্যাসিস্ট্যান্ট প্রফেসর (ফরেনসিক মেডিসিন) ডা. দেবিকা রায়, স্যার সলিমুল্লাহ মেডিকেল কলেজের সহকারী অধ্যাপক (ফরেনসিক মেডিসিন) আসমাউল হুসনা, বাংলাদেশ হেলথ ওয়াচের কোঅর্ডিনেটর মাহরুবা খানম, জেড এইচ শিকদার ওমেন্স মেডিকেল কলেজ ও হসপিটালের প্রফেসর এস কে জিন্নাত আরা নাসরিন, ডা. রাহাত আরা নূর, শিশু বিশেষজ্ঞ ডা. নাজমুন নাহার, ডা. সায়রা বানু, মহিলা পরিষদের লিগ্যাল অ্যাডভোকেসি অ্যান্ড লবি শাখার ডিরেক্টর অ্যাডভোকেট দীপ্তি শিকদার ও ডেপুটি ডিরেক্টর (লিগ্যাল অ্যাডভোকেসি অ্যান্ড লবি) অ্যাডভোকেট রামলাল রাহা এবং অ্যাসিস্ট্যান্ট ডিরেক্টর অ্যাডভোকেট ফাতেমা খাতুন।
সভাপতির বক্তব্যে ডা. ফওজিয়া মোসলেম বলেন, নারীর প্রতি সহিংসতা প্রতিরোধে বিচারের ক্ষেত্রে কিছুটা অগ্রগতি হয়েছে তবে সহিংসতা বাড়ছে। এ সহিংসতা প্রতিরোধে এখনকার সময়ে তৈরি হওয়া চাহিদার দিকে খেয়াল করতে হবে। হাইকোর্ট বিভাগের টু-ফিঙ্গার টেস্ট নিষিদ্ধ করে দেওয়া রায় বাস্তবায়নে সরকারি, বেসরকারি সংস্থা এবং স্বাস্থ্যসেবা দানকারী সংস্থা ও আইনি সংস্থাকে যৌথভাবে কাজ করতে হবে। সেবাদানকারী সংস্থাকে আরও সচেতন হতে হবে, একইসঙ্গে মানবিক হওয়ার পাশাপাশি পেশাগত দায়বদ্ধতা নিশ্চিতে সদিচ্ছা থাকতে হবে।
সম্পাদক ও প্রকাশক
এ এম জি ফেরদৌস
ব্যবস্থাপনা সম্পাদক
নাহিদুল ফাহিম
প্রযুক্তি ব্যবস্থাপনা
ইঞ্জি. মেহেদী হাসান |
প্রধান কার্যালয়
পূর্ব লিংক রোড, ঝিরংঝা, কক্সবাজার
মোবাইল: ০১৮১৯-৫০২-৩২২
ই-মেইল beachnews247@gmail.com |
প্রিন্টের তারিখ ও সময়: February 12, 2025, 10:25 am